রনি আহম্মেদ

জি এম পি'র পূবাইল থানাধীন, ৪২ নং ওয়ার্ডস্থ পদ হারবাইদ এলাকায় এই ধর্ষণের লোম হর্ষক ঘটনা ঘটে। 

 কামাল হোসেন (৩৯) বাদী  জানান, তার বোবা স্ত্রী ও শিশু সন্তান মোছাঃ তাহাস্সুম(৭) সহ গত ফেব্রুয়ারী ২০২০ইং তারিখে পদহারবাইদ এলাকার সেলিমের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেয়। জীবন জীবিকার তাগিদে ঐ এলাকার একটি মাদ্রাসায় চাকরী নেয় কামাল হোসেন। বেতনে না পোষালে সে মাদ্রাসার চাকরি ছেড়ে দিয়ে গার্মেন্টস্ এ চাকরি নেন।  কোভিড (১৯) করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ  থেকে সরকারী সাধারণ ছুটি হওয়ায় উক্ত গার্মেন্টসে্ ডিউটি বন্ধ হয়ে। এদিকে ঘরে অভুক্ত বোবা স্ত্রী ও সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে আয় রোজগারের সন্ধানে কাজ খুঁজতে থাকেন তিনি।    

কর্মহীন হয়ে পড়ায় কামাল হোসেন দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন দিকে কর্মের সন্ধানে ছুটাছটি করতে থাকে। এরই ফাঁকে গত ৯ মে ২০২০ইং ১৫ রোজার  রাত আনুমানিক ৯.০০ টার দিকে বাড়ির মালিক সেলিম (৫০) তার দোতলায় তাহাস্সুম(৭) কে টাকা দিবেন বলে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ির অন্যন্য রুমে লোকজন থাকায় কৌশলে তাহাস্সুম কে টেলিভিশন দেখতে বলে সেলিম, পরে টিভি দেখা শেষে সে নিচ তলায় যাইতে চাইলে ধর্ষক সেলিম (৫০) তাহাস্সুমকে বলেন, আয় তোকে টাকা দিবো নিয়ে যা। অবুঝ শিশু টাকার লোভে তার পিছে পিছে দোতলার দক্ষিন পশ্চিম কোনার রুমে যায়। এরপর রুমের দরজা বন্ধ করে গল্পের ছলে আদর করতে করতে তাহাস্সুমের যোনিপথে হাত দেয় এবং জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। যোনিপথ অপ্রস্থ্য হওয়ায় সেলিমের পুরুসাঙ্গের ঘর্ষনে ব্যথা অনুভব হলে তাহাস্সুম চিৎকার দেয়। চিৎকার শুনে কামালের স্ত্রী দোতলায় উঠে ঐরুমে ঢুকতেই ধর্ষক সেলিম( ৫০) ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির বাহিরে চলে যায়।  মেয়েকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে তারাতারি কোলে নিয়ে নিচে তাদের রুমে গিয়ে সালোয়ার খুলে দেখতে পায় হালকা রক্ত ও আঠালোভাব। 

কামাল আরও জানান,বিবাদী সেলিম (৫০) বাড়ির মালিকের স্ত্রী দীর্ঘ দিন যাবৎ দেশের বাহিরে থাকেন । তার স্ত্রী দেশে না থাকার কারনে আরও কত মা,বোনের ইজ্জত যে নষ্ট করেছে তা একমাত্র আল্লাহই জানেন । আমি টাকা পয়সা চাই না ,আমার মেয়ের এত বড় ক্ষতির সঠিক বিচার চাই ।

এমতাবস্থায় পাশের বাড়িতে থাকা কামালের শালিকাকে ডাকলে সেও একই পরিস্থিতি দেখতে পায়। কিছু সময়পর কামাল বাসায় ফিরলে জানতে পারে তার শিশু সন্তান যৌন নির্যাতনের স্বীকার। মানসন্মানের ভয়ে স্থানীয় ফার্ম্মেসীতে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসাপত্র নিয়ে খ্যান্ত থাকে কামাল। পরের দিন ১০মে ২০২০ইং সকালে টঙ্গী মেডিকেলে আসতে দেখে ধর্ষক সেলিম ও তার লোকজন কামাল ও তার স্ত্রীকে বাঁধা প্রদান করে এবং অবস্থা বেগতিক দেখে ধর্ষকের শেলক মিঃ ফারুক ও স্থানীয় দু - তিন জন পরষ্পর যোগসাজশে গোপনে কামাল কে নগদ ১২,০০০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে, গত ৩ মাসের ঘর ভাড়া মাফ,  দিতে হবে না বলে তাৎক্ষনিক অত্র এলাকা ছেড়ে অন্যত্রে চলে যাওয়ার জন্য প্রেসার তৈরী করে এবং এই ঘটনা পুলিশ বা  অন্য কেউকে জানালে কামালকে সহ স্ত্রী ও সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। 

এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে ব্যাগবাটি সহ কামাল তার পরিবারকে নিয়ে জানের ভয়ে অন্যত্রে চলে যেতে বাধ্য হয়। পরিবেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও সন্তানের উপর যৌন নির্যাতন ও নিজেদের জানের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অবশেষে  গত ২৮/৫/২০২০ইং পূবাইল থানায়  স্ব শরীরে উপস্থিত হয়ে দিদারুল, আলম উপ পুলিশ পরিদর্শক, পূবাইল থানাকে ঘটনার বর্ণনা দেন এবং অভিযোগ দায়ের করেন কামাল হোসেন । পূবাইল থানা সূত্রে জানা যায়,  লোমহর্ষক এই ঘটনা শোনার পর অফিসার ইনচার্জ কে অবহিত করলে তার নির্দেশে অভিযোগ আমলে নিয়ে, ঐ দিনেই যথাযথ তদন্ত পূর্বক আসামী সেলিম (৫০) কে গ্রেপ্তার করে পূবাইল থানা পুলিশ এবং মামলা রেকর্ড করে পূবাইল থানা। 

পূবাইল থানার মামলা নং ১৬ - ৯ এর (১) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০(সংশোধিত২০০৩)। তারিখ ২৮/০৫/২০২০ইং